Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
শহীদদের গণকবর
স্থান
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় ০৫ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে দড়িমুকুন্দ গ্রামে অবস্থিত।
কিভাবে যাওয়া যায়
বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলায় ০৫ নং মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থিত। সেখানে সিএনজি.মোটর-সাইকেল ইত্যাদি দ্বারা যাওয়া সম্ভব।
বিস্তারিত

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা:

‘শহীদদের আত্মত্যাগের ঘটনা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করে রাখার জন্য বগুড়ার শেরপুরে আজও তেমন কোন উলে­­খযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শহীদদের গণকবরগুলো এখনো অযত্ন অবহেলায় পড়ে রয়েছে। অনেক গণকবর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আবার অনেকগুলোর অস্তিত্ব বিলীনের পথে। সরকারি বা বেসরকারি কোন সংস্থা স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারীদের শেষ চিহ্নটুকু ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেনি। এ দীর্ঘ সময়ে উপজেলায় মাত্র একটি গণকবর সংরক্ষণের জন্য নিরাপত্তা প্রাচীর ও নামফলক স্থাপন করা হলেও বাকিগুলোর অবস্থা করুন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শেরপুরের কল্যাণী, ঘোগা, দড়িমুকুন্দ ও বাগড়া কলোণীর গণহত্যার যে ঘটনা ঘটেছে তা বর্ণনা শুনে গাঁ শিউড়ে ওঠে।

পাক বাহিনী যুদ্ধকালীন সময়ে বাগড়া কলোনী গ্রামে নির্মম হত্যাযোজ্ঞ চালায়। স্বাধীনতাকামী এই গ্রামবাসীরা মিছিল নিয়ে রাস্তায় বের হলে তাদের ওপর নেমে আসে হায়েনাদের তান্ডব। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ফরিদ উদ্দিন জানান, তার পিতা সদর আলী সরকারসহ গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক লোক বাংলার স্বাধীনতার পক্ষে মিছিল নিয়ে গ্রামের পাশের প্রধান সড়কে যান। এ দেশের স্বধীনতা বিরোধী চক্র এ খবর পাক সেনাদের কাছে পৌঁছে দেয়। কোন দিনের ঘটনা তা আজ তার মনে নেই। তখন দুপুর ১২টা। পাক সেনারা এসে মিছিল কারীদের ঘেরাও করে। পরে তাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় মনছের আলীর ইট ভাটায়। ভাটার ভিতর তাঁদের লাইন ধরে বসে রাখা হয়। এরপর শুরু হয় পাক সেনাদের বর্বরোচিত কায়দায় মানুষ হত্যা। প্রথমে বসে থাকা স্বাধীনতাকামী অসহায় মানুষদের ওপর বোমা বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। এরপর আহতদের ওপর চালানো হয় মেশিন গানের গুলি। যে ইটের ভাটায় রাত দিন লেলিহান শিখার উদগীরণ হত, সেই ভাটা নিমিষেই শহীদদের রক্তে সিক্ত হলো। তপ্ত ইটগুলোর দীর্ঘদিনের তৃষ্ণা যেন হায়েনারা মিটিয়ে দিল স্বধীনতাকামীদের রক্ত দিয়ে। এ ঘটনায় প্রায় ৫০/৬০ জন বাঙালী শহীদ হন। নির্মম এ ঘটনার পর উদ্ধার কারীরা দেখতে পান, আহতরা শহীদদের রক্ত চুষে খাচ্ছে। নিহতদের আত্মীয়রা নিজ নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে দাফন করায় এখানকার শহীদদের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। তবে গ্রামের পূর্বপাশে একটি ভিটায় এক জায়গার ১০/১২ জনকে কবর দেয়া হয়েছে বলে গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এ স্থানটি বর্তমানে কয়েকটি তাল গাছ দিয়ে ঘেরা রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যে সে দিনের ঘটনায় সকল শহীদদের নাম জানা যায়নি। ব্যাপক অনুসন্ধান করে এলাকাবাসী সূত্রে যাদের নাম পাওয়া যায় তারা হচ্ছেন, আফসার মন্ডল, শরকত মন্ডল,আলী আকবর মন্ডল, আয়েজ উদ্দিন মন্ডল, আলতাব সেখ, সিফাত মোল­া, কুদ্দুস,হোসেন, মনছের, খোকা, আফজাল, ঈমান, হযরত, সাত্তার, রিয়াজ উদ্দিন, যদিমুদ্দিন, সদর আলী সরকার, আজিজ ও নবা ফকির, সেদিন যারা নিহত হয়েছিলেন তারা

শহীদ আফসার মন্ডলের বিধবা স্ত্রী ফাতেমা (৬১) জানান, আমার স্বামীকে স্বধীনতার বছর মিলিটারীরা মেরে ফেলেছে। পুনর্বাসন তো দূরে থাক। র্দীঘ দিন পার হলেও আমাদের কেউ খোঁজ খবর নিতে আসেনি। এলাকাবাসী জানান, তারা গণকবরগুলো সংরক্ষনের জন্য উপজেলা পরিষদে আবেদন করলেও তা আজো বাস্তবায়ন হয়নি। কল্যানী এবং ঘোগার বদ্ধভূমির অবস্থাও একই। শুধু স্মৃতি হয়ে আছে। এ গণকবরগুলো পড়ে আছে অযত্ন আর অবহেলায়। শহীদদের গণকবরগুলো সংস্কার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন জানান, অতিসত্তর প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়ে এসব গণকবরগুলো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।